Header Ads

Breaking News

শক্তিরুপেন > মাতৃরুপেন

শ্যামা মা উড়াচ্ছে ঘুড়ি
ভব সংসার বাজারের মাঝে
ওই যে মন ঘুড়ি
আশা বায়ু বাঁধা তারে মায়া দড়ি 
শ্যামা মা -- যাঁর অপর নাম কালী।  এই কাজলবরণী কন্যে আসলে কে ? সে কিন্তু যে সে নয়, পরমাপ্রকৃতি , আদ্যাশক্তি মা মহামায়া। তাঁর গায়ের রং শ্যামবর্ণা , যা কিনা তাঁর ক্ষোভের , রোষের ফলশ্রুতি।  তিনি দশমহাবিদ্যার  অন্যতমা মহাকালী। 

প্রথম কালী রূপ শিবকে  দেখান সতী। ভারতীয় পুরান এমনটাই বলে থাকে।  পিতা দক্ষ আয়োজন করেছেন এক যজ্ঞর। সেখানে  শিব যেতে দিচ্ছিলেন না সতীকে।  কারণ ত্রিকালজ্ঞ শিব জানতেন এর পরিণাম কি হবে। তখনি ক্রোধে অস্থির সতী নিজের দশ রূপ প্রকাশ করেন।  
এরপর কালের গতিতে শিব-পার্বতীর বিয়ে। তারপর অপ্সরাদের সামনে 'অঞ্জনসদৃশা কালী '  স্বামীর এই ঠাট্টার জবাবে আপন কৃষ্ণ-কোষ ত্যাগ করে কালী হলেন গৌরী।  শিব নিজে নাকি কালির তপস্যায় তুষ্ট হয়ে মহাকৌশী প্রপাতের জল দিয়ে কালিকে স্নান করান। 

কিন্তু কালী রূপ চিরতরে প্রচ্ছন্ন থাকার নয়। তাই তো দানবদলনের জন্য বার বার প্রকটিত হন দেবী কালী।  তখন তাঁর রূপ ভয়ঙ্করী। গৌরী স্বরূপের কমনীয়তার লেশমাত্র থাকে না তাঁর মধ্যে।  মা যা  ছিলেন আর মা যা হয়েছেন ! তিনি তখন ভয়ঙ্করী , বিভিষনা , বিবসনা , গলে  মুণ্ডমালা , কটিতে কাটাহাতের কোমরবন্ধনী। মাতৃস্বরূপ পুরোপুরি অন্তর্হিত। উদ্যত খড়গ হাতে তিনি তখন সংহারের নেশায় মাতোয়ারা। এরই মাঝে  মায়ের ভুবনভোলানো কালো রূপে চারিদিক আলোকিত। 

এদিকে  সৃষ্টি যায় যায়। তাই স্ত্রীকে শান্ত করতে শিব ধারণ করলেন বটুকেশ্বর স্বরূপ।  রোরুদ্যমান সেই শিশুকে দেখে মা কালির রাগ শান্ত হলো। কালরুপিনি দেবীর মধ্যে ফুটে উঠলো মা মহামায়ার স্বরূপ। দেবী কালির দু চোখ দিয়ে অঝোরে ঝরতে লাগলো অশ্রুধারা। দেবী কালী রুপান্তরিত হলেন মা কালিতে। কারণ যাদের তিনি বধ  করেছেন তারাও তো তাঁরই সন্তান। 
সদানন্দময়ী কালী
মহাকালের মনমোহিনী
তুমি আপনি নাচ আপনি গাও মা
আপনি দাও মা করতালি  

লিখলেন ময়ুমী গুপ্ত 

No comments