'ইন্ডাস্ট্রি বন্ধুত্ব করার জায়গা নয়'- জয়মালা
বর্ধমান থেকে কলকাতা। জার্নিটা খুব একটা সহজ ছিল না। আজ ছ'বছর স্ট্রাগল করার পর ইন্ডাস্ট্রি-তে নিজের জায়গা করেছেন। অপরাজিত, কিরনমালার মত সিরিয়ালে কাজ করে আজ তাঁর নাম ঘরে ঘরে। প্রেম, অভিনয়, ইন্ডাস্ট্রি-তে বন্ধু সব নিয়ে Kolkata GlitZ-এর সামনে খোলাখুলি আড্ডায় জয়মালা গাঙ্গুলি। শুনলেন সুমি মিত্র। ফটোগ্রাফার সাগ্নিক মজুমদার।
অভিনয়ে আসা
কিভাবে?
জয়মালা :- ২০০৬ সালে আমি
কলকাতায় এসেছিলাম। তখন এয়ার হোস্টেস হওয়ার ইচ্ছে নিয়েই এসেছিলাম। ছোটো থেকে এটাই স্বপ্ন
ছিল। আমি ফ্রাঙ্কফিনে ক্লাস করতে করতেই এয়ার হোস্টেস-এর চাকরি পেয়ে যাই। কিন্তু তারপর
কিছু কু-প্রস্তাব আসাতে আমি সরাসরি সেখান থেকে বেরিয়ে আসি আমার স্বপ্নটাকে ভেঙ্গে দিয়ে।
ফ্রাঙ্কফিনে থাকাকালীনই আমার এক স্যর ছিলেন, কৌশিক স্যর। তখন দুটো টালেন্ট হান্ট শো
শুরু হচ্ছিল, তখন স্যর-ই আমায় বললেন যে ওখানে যেকোনো একটায় অংশগ্রহন করতে। তাহলে গ্রুমিং-টা
আরো ভালো হবে। ওখানে গিয়ে বাকি সব মেয়েদের দেখে মনে হয়েছিল আমি পারবই না কিছু করতে।
ছ'মাস ধরে চলা সেই শো-তে ১৯২ জন পার্টিসিপেন্ট-এর মধ্যে ছ'জন ফাইনালিস্ট হয়েছিল। তার
মধ্যে আমিও একজন ছিলাম। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে শুরু।
ছোটবেলা থেকে কি ফিল্ম লাইনে ইন্টারেস্ট ছিল?
জয়মালা :- কখনই না। আমি
যে কখনো অভিনয় করব এটা অভিনয় করার আগের দিনও আমি জানতাম না। এখন আমি ভাবি যে আমি বোধ
হয় সবচেয়ে ভালো অভিনয়টাই পারি। এখন ৩ দিনের বেশি ক্যামেরা ফেস করতে না পারলে অস্বস্তি
হয়।
প্রথম প্রেম?
জয়মালা :- স্কুল লাইফে।
আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ছিল। ক্লাস নাইন, টেনে আমি নবদ্বীপে থাকতাম। বাবা তখন নবদ্বীপ কলেজের
লেকচারার ছিলেন। এরপর ইলেভেনে যখন বর্ধমান চলে আসি তখন আমি ব্যপারটা ফিল করি। তখন মনে
হচ্ছিল বাকি বন্ধুদের ছেড়ে থাকতে পারছি, কিন্তু ওকে ছেড়ে নয়। তখন মোবাইল ছিল না। আমার এখনো মনে আছে প্রত্যেক সোমবার ও আমাদের ল্যান্ড
ফোনে বুথ থেকে ফোন করত। আর ঠিক পাঁচ মিনিটের জন্যই ফোন করত। তখন থেকেই শুরু। ছ'বছরের জার্নি ছিল। তারপর হঠাত-ই ব্রেক আপ হয়।
ওর আমার কাজ নিয়ে প্রবলেম ছিল। ভালবাসা আর কাজের মধ্যে, কাজকেই বেছে ছিলাম। কারণ আমি
বরাবরই নিজে কিছু করতে চেয়েছিলাম। এখন ও বিবাহিত। নিজেও ডাক্তার, বিয়েও করেছে আরেকজন
ডাক্তারকে।ভাবতে অবাক লাগে যে শেষ পর্যন্ত ও একজন চাকরিজীবি মেয়েকেই বিয়ে করল।
এখন তার সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে?
জয়মালা :- না। তবে বাকি
বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। আর তাদের থেকেই ওর সব খবর পাই।
তারপরে আর
কোনো সম্পর্ক হয়েছে?
জয়মালা :- অবশ্যই হয়েছে। তবে সেগুলো এতটাই খারাপভাবে শেষ হয়েছে যে আমি সত্যি
সেগুলো আর মনে করতে চাই না। এই মুহুর্তে আমি সিঙ্গল। বিয়ে করলেও ঠিক করেছি বাড়ি থেকে
দেখাশুনা করেই করব।
তোমার প্রিয়
বন্ধু কে?
জয়মালা :- আমি যেখানে চাকরি
করতাম। সেখানে আমার বস ছিল একজন হিমাচলী। অনিলজি বলে তাকে ডাকতাম। সেই আমার প্রিয় বন্ধু।
এমনকি ওর বৌও আমার খুব ভালো বন্ধু হয়ে গিয়েছে।
ইন্ডাস্ট্রিতে
ভালো বন্ধু?
জয়মালা :- ইন্ডাস্ট্রি আমায়
অনেক কিছু শিখিয়েছে। ইন্ডাস্ট্রি আমায় বুঝিয়েছে যে এটা বন্ধুত্ব করার জায়গা নয়। তবে কিরনমালায় যে আমার বোনের চরিত্র করছে সায়ন্তনী, সে আমার খুব কাছের একজন বন্ধু। আসলে
ওর আর আমার জীবনের ঘটনার অনেক মিল রয়েছে। তাই হয়ত আমরা ভালো বন্ধু।
প্রিয় অভিনেতা?
জয়মালা :- বাংলায় উত্তম
কুমার, বুম্বা দা। হিন্দিতে এখন আমির খান। একটা সময়ে শাহরুখের ফ্যান ছিলাম। এছাড়াও
রনবীর কাপুর, পরেশ রাওয়াল, নাসিরুদ্দিন শাহ, অনুপম খের।
প্রিয় অভিনেত্রী?
জয়মালা :- বাংলায় সুচিত্রা
সেন। আর হিন্দিতে সবসময় মাধুরী দীক্ষিত। আর মাধুরীর পরে কাজল।
প্রিয় রং?
জয়মালা :- লাল।
স্বপ্নের চরিত্র?
জয়মালা :- ব্ল্যাক-এ রানী
মুখার্জির চরিত্রটা। আর বরফির প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার চরিত্রটা।
সাহিত্যের কোনো চরিত্র?
জয়মালা :- আমি বাংলায় অনার্স
নিয়ে পড়েছি। যোগাযোগের কুমুদিনী চরিত্রটা আমার বরাবরই খুব পছন্দের ছিল। আমার সাথে খুব
মিল আছে চরিত্রটার। ভাঙ্গব তবু মচকাব না।